বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫০ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ নিখোঁজের ১৮ দিন পর শুক্রবার মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের হোসেন্দী বাজার সংলগ্ন নয়াগাঁও এলাকায় বাড়ির পাশের ডোবা থেকে হাসান (১৮) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ছেলেটির নিখোঁজ হওয়া, বাড়ির পাশের ডোবায় লাশ পাওয়া যাওয়া, স্থানীয় এক প্রভাবশালী ছেলের সাথে বিরোধ, মাদকাসক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে রহস্য বাড়তে থাকে। তবে মাত্র একদিনের মাথায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত করেছে গজারিয়া থানা পুলিশ।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছেলেটির বাবা-মা ও বোন তাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রইছ উদ্দিন।
এদিকে এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ছেলেটির বাবা শামীম মিয়া (৪০), মা হাসিনা বেগম (৩৮) ও ছোট বোনকে (১৫) আটক করা হয়েছে।
রইছ উদ্দিন জানান, ঘটনার ১৮ দিন পর গতকাল শুক্রবার লাশ উদ্ধার করেন তারা। তবে বাড়ির এতো কাছে লাশ পাওয়া এবং হত্যাকাণ্ড নিয়ে স্বজনদের অসংলগ্ন বক্তব্যে প্রথম থেকে সন্দেহ হতে থাকে তাদের। ছেলেটির মা হাসিনা বেগম বলেন যে তিনি স্বপ্নে দেখেছেন প্রতিবেশি শাহ আলম তার ছেলেকে হত্যা করে লাশ ডোবায় ফেলে রেখেছে এতে তাদের সন্দেহ আরও বাড়তে থাকে। তবে ছেলেটি মাদকাসক্ত থাকায় এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ছেলের সাথে বিরোধ থাকায় সবগুলো বিষয় মাথায় নিয়ে এগোতে থাকেন তারা।
এদিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল চারজনকে আটক করা হয়। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে ছেলেটির বাবা-মা এবং বোন তাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, গত ২১ ডিসেম্বর রাতে হাসানের আপন ছোট বোন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাথরুমে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাকে জড়িয়ে ধরে হাসান। ধর্ষণ করার চেষ্টা করলে মেয়েটির আত্মচিৎকারে বাবা-মা ছুটে যান। এ সময়ে রাগের মাথায় হাসানের মা হাসিনা বেগম তাকে ঘরে নিয়ে মুখে বালিশ চেপে ধরেন। বাবা শামীম মিয়া তার হাত-পা ধরে রাখেন এবং ছোট বোন শিলা ধারালো ছুরি দিয়ে তার পুরুষাঙ্গ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি এবং গামছা উদ্ধার করেছে।
মুন্সীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশফাকুজ্জামান জানান, নিহতের স্বজনরা প্রতিপক্ষ এক জনের ওপর দায় চাপাতে চেয়েছিলো। তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে বারবার পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। তবে তাদের কথায় বিভ্রান্ত হয়নি পুলিশ। সঠিক তদন্ত শেষে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত করেছেন তারা।
এদিকে বাবা-মা নিজের ছেলেকে হত্যা করেছে- এমন ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সুশীল সমাজ বিষয়টিকে সামাজিক অবক্ষয়ের চূড়ান্ত পরিণতি বলে অভিহিত করেছেন।
Leave a Reply